অকশন শিট দেখে সেরা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কেনার উপায়

অকশন শিট দেখে সেরা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কেনা

জাপানি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা তৈরি অকশন শিট যাচাই করে আপনি কিনতে পারেন সেরা রিকন্ডিশন্ড গাড়িটি। কিন্তু কিভাবে অকশন শিট যাচাই করবেন? আপনার যদি অকশন শিট যাচাইকরণ সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন বা দ্বিধা থাকে তবে আপনি ঠিক জায়গায়ই এসেছেন। আজকে আমরা জানবো অকশন শিট দেখে সেরা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কেনার উপায়।

জাপান থেকে বাংলাদেশে যত গাড়ি আসে তার প্রায় অর্ধেকই হয় পুরানো অথবা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি। দুঃখজনক হলেও এটাই সত্যি। কেননা জাপানিরা কোনো গাড়ি বছর দুয়েক ব্যবহারের পর নতুন গাড়ি কিনে নেন। আর পুরানো গাড়িগুলো জাপান সরকার কিনে নিয়ে নতুনের মতো করে নিলাম করে, আর এসব গাড়িগুলোকেই আমরা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি হিসেবে চিনি। যার বেশিরভাগই আবার নতুন গাড়ি হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হয়ে থাকে। নতুন ভেবে পুরানো বা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কিনে ক্ষতিগ্রস্ত না হতে চাইলে bhalogari.com হতে পারে আপনার সেরা সমাধান। ভালোগাড়ি থেকে ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি, পুরানো কিংবা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি যেকোনো প্রকার গাড়ি কিনুন নিশ্চিন্তে। 

অকশন শিট

অকশন শিট আসলে কি? যে গাড়ি রিকন্ডিশন করা হয় ওই গাড়িটির ছবিসহ যাবতীয় সব খুঁটিনাটি তথ্য একটি কাগজে লিপিবদ্ধ করা হয় যেন খুব সহজেই অকশন শিট দেখে গাড়ির অবস্থা সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যায়। গাড়িকে যখন নিলামে তোলা হয় তখন হাতে সময় থাকে মাত্র ২-৩ মিনিটের মতো। এতো অল্প সময়ে কোনো গাড়ি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া সম্ভব না তাই এই অকশন শিটের ব্যবস্থা করা হয়। আর অকশন শিটে একদম খুঁটিনাটি সকল তথ্য নির্ভুল থাকে তাই শুধুমাত্র অকশন শিট যাচাই করেই কেউ কোনো গাড়ি কিনে নিতে পারে।

অকশন  শিটের প্রয়োজনীয়তা

অকশন শিট কিসের জন্য বানানো হয় তা তো আমরা জানলাম। এবার চলুন অকশন শিটের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে একটু বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

অকশন শিটে একটি গাড়ির বিশদ বিবরণ এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় আর সেইসাথে সমস্ত তথ্য এমনভাবে তুলে ধরা হয় যে গাড়ি কেনার জন্য গাড়িটিকে চোখে দেখারও প্রয়োজন পড়ে না। শুধুমাত্র একটি কাগজে চোখ বুলিয়ে নিলেই যদি সব ধারণা পেয়ে যাওয়া যায় তবে এতো ঝামেলা কেন?

তাছাড়া, অকশন শিটে উল্লেখিত গাড়ির মাইলেজের উপর ভিত্তি করেই নির্ধারণ করা হয় গাড়িটির মূল্য কেমন হবে। যেমন, ধরুণ আপনি দুটি গাড়ির অকশন শিট যাচাই করছেন। এর মধ্যে একটি গাড়ির মাইলেজ ৫০,০০০ কিমি অন্যটির ১০,০০০।  মাইলেজ বেশি হলে গাড়ির দাম তুলনামূলক কম হবে আর মাইলেজ কম হলে গাড়ির দাম বেশি হবে। 

তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে অকশন শিট যাচাইয়ের আগে অবশ্যই প্রতিষ্ঠানটির বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করে নিবেন। তাহলে ভুল তথ্য পাওয়ার কোনো আশঙ্কা থাকবে না।

রিকন্ডিশন গাড়ি গ্রেডের ব্যাখ্যা

এক্সটেরিয়র, ইন্টেরিয়র এবং মাইলেজ এই তিনটি ব্যাপারের উপর ভিত্তি করে অকশন শিটে গাড়ির গ্রেডিং করা হয়। 

এক্সটেরিয়র গ্রেড পদ্ধতি

গাড়ির এক্সটেরিয়রের ডেন্ট, স্ক্র‍্যাচ বা অন্য যেকোন সমস্যার তীব্রতা বোঝানো হয় A,B,C,D দিয়ে।

গ্রেড A – এক্সটেরিয়র প্রায় নির্ভুল অথবা নতুনের মতো হলে গ্রেড হবে A।

গ্রেড B – গাড়িতে সামান্য স্ক্র‍্যাচ থাকলে এক্সটেরিয়র গ্রেড হবে B। 

গ্রেড C – গাড়ির অবস্থা মোটমুটি ভালো কিন্তু তুলনামূলক বড় কোনো স্ক্র‍্যাচ বা দাগ থাকে তবে সেটা C গ্রেডের হবে। 

গ্রেড D –  গাড়ির অবস্থা খুব একটা ভালো না থাকলে সেটা D গ্রেডের অন্তর্ভুক্ত। 

গ্রেড S – এই গ্রেডের গাড়িগুলো হয় একদম ঝকঝকে নতুন গাড়ির মতোই। এসব গ্রেডের গাড়ি উপর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে এগুলো রিকন্ডিশন্ড। মূলত বাংলাদেশে এসব S গ্রেডের গাড়িগুলোই নতুন বলে চালিয়ে দেওয়া হয়।  

এছাড়া আরো কিছু অক্ষর দিয়েও এক্সটেরিয়রের অবস্থা বোঝানো হয়। যেমন:  

A- গাড়ির উপরের অংশে কোনো দাগ থাকলে

U – গাড়িতে কোনো প্রকার গভীর স্ক্র‍্যাচ থাকলে

B – স্ক্র‍্যাচের সাথে কিছু গর্ত থাকলে

W– গাড়িটিকে হালকা মেরামত করানো হয়েছে এমন

S – মরিচা পড়লে (কমলা রং দেখা যায় এমন)

C – মরিচা বেড়ে ভেতরের ধাতুর অংশ দেখা যায় এমন

P – রংয়ের দাগ থাকলে

H –  রং উঠে গেলে

XX – প্যানেল প্রতিস্থাপন করা হলে

X – কোনো পার্টসের পরিবর্তন করা প্রয়োজন হলে

G — গ্লাসে কোনো আঘাত থাকলে

Y —  ফাটা কোনো কিছু দেখা গেলে

E – গাড়িতে কোনো প্রকার টোল লক্ষ্যণীয় হলে

ইন্টেরিওর গ্রেডিং পদ্ধতি

গ্রেড A – এই গ্রেড দিয়ে বোঝানো হয় গাড়ির ভেতরের সমস্ত পার্টস প্রায় নতুনের মতোই ঠিকঠাক আছে। 

গ্রেড B – এই গ্রেড দিয়ে বোঝানো হয় গাড়িগুলো মোটামোটি ভালো অবস্থায় আছে। কোন রং, ডেন্ট বা মেরামতের প্রয়োজন পড়বে না ।

গ্রেড C – এই গ্রেডের গাড়িগুলোর অল্প কিছু মেরামতের প্রয়োজন পড়তে পারে। যেমন- সিগারেটের পোড়া দাগ, খাবারের দাগ ইত্যাদি থাকতে পারে।

গ্রেড D – এই গ্রেডের গাড়িগুলো অন্যান্য গ্রেডের সব গাড়িগুলোর অবস্থার চেয়ে অনেকটা খারাপ হয়। স্ক্র‍্যাচ, পোড়া দাগ অথবা অন্যান্য দাগ লক্ষ্য করা যায়। 

গ্রেড E – সবচেয়ে খারাপ অবস্থার গাড়িগুলোকে গ্রেড E তে ফেলা হয়। ড্যাশ বোর্ড ভাঙ্গা, জীর্ণ আসন, রঙ নষ্ট হয়ে যাওয়া ইত্যাদি অনেকরকম ত্রুটি থাকতে পারে। এমন গাড়ি কিনলে অনেক মেরামতের প্রয়োজন। 

মাইলেজ গ্রেড পদ্ধতি

৭, ৮, ৯ অথবা S গ্রেডের গাড়িগুলো হয় নতুনের কাছাকাছি বা একদমই নতুনের মতো। এই গ্রেডের গাড়িগুলোকে নিলামে বিক্রি করা হয়ে থাকে। সুতরাং, এই গ্রেডের গাড়িগুলোর মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন চলে না।

গ্রেড ৬ – মূলত প্রায় নতুন গাড়ির জন্য গ্রেড ৬ দেওয়া হয় কিন্তু ডেলিভারি মাইলেজ তুলনামূলক বেশী হয়। মাইলেজ সর্বোচ্চ ৩০,০০০ কিমি পর্যন্ত হতে পারে। তবে গাড়িতে কোনো প্রকার স্ক্র‍্যাচ থাকলে গ্রেড ৬ দেওয়া হয়না। অর্থাৎ আপনি খালি চোখে দেখে বুঝতেই পারবেন না যে গাড়িটি নতুন না পুরানো। 

গ্রেড ৫ – সর্বোচ্চ ৫০,০০০ কিমি মাইলেজের গাড়িগুলোকে গ্রেড ৫ এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এমন গাড়িতে সামান্য স্ক্র‍্যাচ থাকতে পারে। গ্রেড ৫ এর গাড়ি নিশ্চিন্তে ৫ বছর চালানো যায়। 

গ্রেড ৪.৫ — গাড়ির অবস্থা বেশ ভালো  কিন্তু মাইলেজ ১ লাখের উপর হলে গ্রেড ৪.৫ দেওয়া হয়।

গ্রেড ৪ — গাড়ির অবস্থা ভালো এবং নির্ভরযোগ্য। কিন্তু মাইলেজ কিছু সমস্যা থাকলে গ্রেড ৪ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে মাইলেজ বেশিও হতে পারে আবার কমও হতে পারে। ফিল্ড টেস্টে অভিজ্ঞদের চোখে পাশ করা গাড়িগুলোকে এই গ্রেডে ফেলা হয়।

গ্রেড ৩.৫ — অনেকটা গ্রেড ৪ এর মতো মানের গাড়ি। কিন্তু রং আর প্যানেলে কিছু মেরামতের প্রয়োজন হলে এই গ্রেডে ফেলা হয়। 

গ্রেড ৩ – জরুরী ভিত্তিতে রং আর প্যানেলের মেরামত করাতে হবে অথবা প্যানেল জরুরী ভিত্তিতে পাল্টাতে হবে এমন সব গাড়ির গ্রেড হয় ৩। শর্ত আর মেয়াদ অনুযায়ী এই গাড়িগুলো গ্রেড ৩ এর মতোই কিন্তু মাইলেজ অনেক বেশী থাকে।

গ্রেড ২ – মোটামুটি খারাপ অবস্থার গাড়িগুলোকে গ্রেড ২-এ ফেলা হয়। এই গ্রেড দিয়ে মূলত গাড়ির বাজে অবস্থা বোঝানো হয় । স্ক্র‍্যাচ, মরিচা  ইত্যাদি গুরুতর সমস্যা নির্দেশ করে এই গ্রেড। আপনি যদি ক্লাসিক বা বাস, ট্রাক জাতীয় পুরানো গাড়ি খোঁজেন তাহলে এই গ্রেড থেকেই নির্বাচন করতে পারেন।

গ্রেড ১ – গ্রেড ১ দুই রকমের হতে পারে, 

১। ইঞ্জিনের মডিফিকেশন 

২। অটো থেকে ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন পরিবর্তন

গ্রেড 0, A, R, RA – এই গ্রেডের গাড়িগুলোর পূর্বে মেরামতের ইতিহাস থাকে। নিলামে গাড়ি বিক্রির সময় গাড়িতে কোনো সমস্যা থাকলে তার উল্লেখ করা হয়। 

জাপানে তৈরি জিনিস হয় নিঁখুত ও উন্নতমানের। জাপানের মানুষ খুব যত্ন নিয়ে যেকোনো কাজ করে বিধায় অন্যান্য দেশে জাপানি পণ্যের চাহিদা অনেক বেশি। আর তা যদি হয় গাড়ি, তবে তো কোনো কথাই নেই। জাপানি রিকন্ডিশন্ড গাড়ি এতোটাই নির্ভরযোগ্য ও ভালো মানে থাকে যে নতুন গাড়ি বলে বিক্রি করলেও তা বোঝায় উপায় থাকে না। 

কিন্তু কষ্টের টাকায় কেনা গাড়ি, নতুন ভেবে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি বেশি দামে কেন কিনবেন? নিজেকে ঠকাতে না চাইলে ভরসা করতে পারেন bhalogari.com এর উপর। আমাদের জাপানি অভিজ্ঞদের দ্বারা তৈরি অকশন শিট যাচাই করে কিনে নিতে পারেন নতুনের মতো ঝকঝকে এক রিকন্ডিশন্ড গাড়ি। পুরানো গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে গাড়ির অবস্থা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই, আমরা প্রায় ২০০ টি চেকপয়েন্ট পরীক্ষা করে গাড়ির সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে থাকি। তাই গাড়ি কিনতে চাইলে bhalogari.com থেকে কিনুন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top